ঢাকা খ্রিস্টাব্দ

বঙ্গাব্দ
আইন

যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যু: অপরাধী নাকি রাজনৈতিক শিকার?

নিজস্ব প্রতিবেদক ০৫ ফেব্রু ২০২৫ ০৮:২৯ পি.এম

কুমিল্লায় যৌথ বাহিনীর হেফাজতে যুবদল নেতা মো. তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যু নিয়ে তীব্র বিতর্ক চলছে। পরিবারের দাবি, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড, যেখানে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল মুখ্য। অন্যদিকে, রাষ্ট্রীয় বাহিনী বলছে, তৌহিদুল ইসলাম মাদক ও অস্ত্র সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু এখনও কোনো পক্ষই সুস্পষ্ট প্রমাণ হাজির করতে পারেনি, যা পুরো ঘটনাকে আরও বিতর্কিত করে তুলেছে।

রাষ্ট্রের অবস্থান: কেন তৌহিদুল ইসলাম সন্দেহভাজন ছিলেন?

সরকারের দাবি অনুযায়ী, তৌহিদুল ইসলাম কুমিল্লার অপরাধ চক্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বিশেষত, মাদক ও অবৈধ অস্ত্র ব্যবসার পৃষ্ঠপোষকতা করার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

কেন তিনি সন্দেহভাজন ছিলেন?

অস্ত্র ও মাদকের সিন্ডিকেট: কুমিল্লা দীর্ঘদিন ধরে মাদকের হটস্পট হিসেবে পরিচিত। সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় এখানে মাদক ও অবৈধ অস্ত্র প্রবেশ সহজ। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, তৌহিদুল ইসলাম এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় থেকে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছিলেন।

গোপন গোয়েন্দা তথ্য: যৌথ বাহিনী বিশেষ সূত্রে জানতে পারে যে, তৌহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ অস্ত্র ও মাদক সরবরাহের কাজে যুক্ত ছিল। এজন্যই তাঁকে আটক করা হয়েছিল বলে বাহিনীর দাবি।

রাজনৈতিক পরিচয়ের অপব্যবহার: তিনি যুবদল নেতা হলেও, স্থানীয় সূত্র বলছে, তিনি রাজনীতির আড়ালে অপরাধ জগৎকে রক্ষা করতেন। তাঁর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কোনো মামলা না থাকলেও, অনেক অপরাধী তাঁর হয়ে কাজ করত বলে গোয়েন্দা প্রতিবেদন উল্লেখ করেছে।

পরিবারের দাবি: বিচারবহির্ভূত হত্যা?

তৌহিদুল ইসলামের পরিবার ও বিএনপি বলছে, তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ ছিলেন এবং তাঁকে রাজনৈতিক কারণে হত্যা করা হয়েছে

পরিবারের অভিযোগ:

মিথ্যা অভিযোগ: পরিবারের ভাষ্যমতে, তৌহিদুল ইসলাম কখনো মাদক বা অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট মামলা ছিল না, যা রাষ্ট্রের অভিযোগকে দুর্বল করে।

নির্যাতনের প্রমাণ: পরিবারের সদস্যরা বলেছেন, তাঁর মরদেহে নির্যাতনের স্পষ্ট চিহ্ন ছিল। অর্থাৎ, হেফাজতে থাকা অবস্থায় নির্যাতন করেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁদের দাবি।

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের আশঙ্কা: এটি একটি সাজানো গ্রেফতার এবং পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হতে পারে বলে পরিবার ও বিএনপি দাবি করেছে।

রাষ্ট্রীয় বাহিনীর দায় ও তদন্তের স্বচ্ছতা এই ঘটনায় সেনাবাহিনীর সংশ্লিষ্ট ক্যাম্প কমান্ডারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই তদন্ত কি স্বচ্ছ হবে?

আগের অভিজ্ঞতা বলছে:

বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনাগুলোর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি হয় না।

তদন্ত কমিটিগুলো অনেক সময় প্রমাণ গোপন করে বা ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে।

তবে, সেনাবাহিনী বলছে, তদন্তের ভিত্তিতে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই মৃত্যু রাষ্ট্রের জন্য কী বার্তা দেয়?

রাষ্ট্রের পক্ষে:

* অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

* মাদক ও অস্ত্র ব্যবসার বিরুদ্ধে অভিযান চালানো দরকার।

* কেউ রাজনৈতিক পরিচয়ে অপরাধ করলে তাকে ছাড় দেওয়া ঠিক নয়।

পরিশেষে বৱতে চাই এটা কি

অপরাধী না রাজনৈতিক বলির পাঁঠা?

এই ঘটনার মাধ্যমে দুটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে:

যদি তৌহিদুল ইসলাম সত্যিই অপরাধী হয়ে থাকেন, তবে তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যেত। বিচারবহির্ভূত হত্যা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।

যদি তিনি নিরপরাধ হন, তবে এটি রাষ্ট্রীয় বাহিনীর ক্ষমতার অপব্যবহার এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ভয়ানক উদাহরণ।

এই ধরনের ঘটনা যদি তদন্তের নামে ধামাচাপা পড়ে যায়, তবে ভবিষ্যতে যেকোনো নাগরিক রাষ্ট্রের টার্গেটে পরিণত হতে পারে, যা গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের জন্য হুমকি।

সঠিক তদন্ত ও স্বচ্ছ বিচারের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উন্মোচনই এই বিতর্কের সমাধান হতে পারে।

আরও খবর

news image

 দক্ষিণ কেরণীগঞ্জে ক্লুলেস হত্যা মামলার তদন্তে প্রাপ্ত আসামী কে আজিমপুর হতে গ্রেফতার 

news image

সাবেক প্রধানমন্ত্রী , স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে

news image

লাকসামে ইভটিজিং এর দায়ে বখাটেকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জেল

news image

লালমনিরহাটে সরকারি চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা, প্রতারক গ্রেপ্তার

news image

'মিডিয়া ছুটাই দেবো'' -পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান

news image

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামী গ্রেফতার

news image

গলাচিপায় মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভা অনুষ্ঠিত

news image

চাঞ্চল্যকর ডাকাতি মামলার আসামী রবিউল আলম গ্রেফতার

news image

ভ্রাম্যমাণ আদালত পাঁচটি ইটভাটা গুঁড়িয়ে দিয়ে দেড় লক্ষ টাকা জরিমানা

news image

যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যু: অপরাধী নাকি রাজনৈতিক শিকার?

news image

সুপ্রিম কোর্টের কয়েকজন বিচারপতির বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশন-রাষ্ট্রপতির

news image

আইনের বাইরে কোন কাজ করা যাবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

news image

লাকসামে ভুমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের