ঢাকা খ্রিস্টাব্দ

বঙ্গাব্দ
জাতীয়

বাংলাদেশে আবাদি জমি হুমকিতে: খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে

বিশেষ প্রতিনিধি ২০ সেপ্টেম্বার ২০২৫ ০৫:৩০ পি.এম

গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে আবাদি বা প্রকৃত ফসলি জমির পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাওয়ায় জাতীয় পর্যায়ে খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। কৃষি বিশেষজ্ঞ, পরিবেশবিদ এবং নীতিনির্ধারকরা বলছেন-এ ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী এক দশকের মধ্যেই গভীর খাদ্য সংকটের মুখোমুখি হতে পারে দেশ। তথ্যে উঠে এসেছে বিপজ্জনক প্রবণতা।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (BBS) এর সদ্য প্রকাশিত প্রতিবেদন ‘বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্টাল স্ট্যাটিস্টিকস ২০২৪’ অনুসারে,
২০২০ সালে দেশে আবাদি জমির পরিমাণ ছিল ২০.০৮ লাখ একর, যা ২০২৩ সালের মধ্যে কমে দাঁড়িয়েছে ১৯.৮৩ লাখ একর। অর্থাৎ মাত্র তিন বছরে ২৫ হাজার একর ফসলি জমি হারিয়ে গেছে, যা গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ হ্রাসের রেকর্ড। সমস্যার মূল কারণ: উন্নয়ন, কিন্তু অপরিকল্পিতভাবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বিপজ্জনক পতনের পেছনে রয়েছে মূলত অপরিকল্পিত নগরায়ন ও স্থাপনা নির্মাণ।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:  শিল্পকারখানা ও অবকাঠামো নির্মাণ, আবাসন প্রকল্প ও রিয়েল এস্টেট ব্যবসার বিস্তার, নতুন রাস্তাঘাট নির্মাণ, গ্রামীণ এলাকাতেও জমি ভরাট করে বাড়িঘর নির্মাণ। বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কবি ড. শাহ মোহাম্মদ সানাউল হক বলেন,
“যেভাবে ফসলি জমি হ্রাস পাচ্ছে, এটি শুধু কৃষি নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের খাদ্য নিশ্চয়তার জন্যও এক বড় হুমকি। পরিকল্পনাহীন উন্নয়ন কার্যক্রম বন্ধ না হলে আত্মনির্ভর খাদ্য ব্যবস্থার স্বপ্ন ধ্বংস হয়ে যাবে।”
আসুন জানি সমস্যার পরিণতি কী হতে পারে?  খাদ্য ঘাটতি: দেশীয় উৎপাদন কমে গেলে আমদানির উপর নির্ভরতা বাড়বে। ব্যয় বৃদ্ধি: আমদানিকৃত খাদ্যের উপর ভর্তুকি দিতে গিয়ে সরকারকে বাড়তি খরচ করতে হবে। কৃষকের জীবিকায় আঘাত: জমি হারালে কৃষক পরিবারগুলো সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পরিবেশ বিপর্যয়: জমির ভারসাম্য নষ্ট হলে প্রতিবেশ ও পরিবেশেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। আসুন জানি- সমাধান কী হতে পারে? বিশেষজ্ঞ ও পরিকল্পনাবিদদের মতে, নিম্নোক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি:  কঠোর আইন প্রয়োগ।“ফসলি জমি সংরক্ষণ আইন” দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। বিশেষ করে পুকুর, জলাশয় ও কৃষিজমি ভরাট বন্ধে আইন আরও কঠোর করতে হবে। ভূমি রূপান্তরে স্থানীয় প্রশাসনের অনুমোদন বাধ্যতামূলক করা উচিত। পরিকল্পিত নগরায়ন: শহর ও গ্রামাঞ্চলে জমির ব্যবহার পরিকল্পনা (Land Use Plan) অনুসরণ করতে হবে। কৃষিজমি এলাকায় শিল্প স্থাপন বা আবাসন প্রকল্প অনুমোদন না দেওয়া। সচেতনতা বৃদ্ধি: স্থানীয় পর্যায়ে কৃষকদের মধ্যে জমির গুরুত্ব বোঝাতে প্রশিক্ষণ ও প্রচারণা বাড়াতে হবে। স্কুল পর্যায় থেকেই কৃষির প্রতি আগ্রহ ও সচেতনতা গড়ে তোলা। প্রতিবছর ফসলি জমি মানচিত্র হালনাগাদ করা। উপগ্রহচিত্র ও ড্রোন ব্যবহারের মাধ্যমে জমির হারানোর হার পর্যবেক্ষণ। সরকারি নীতিমালায় জমির পরিসংখ্যান প্রকাশ বাধ্যতামূলক করা। আইনের প্রস্তাব: পুকুর ও জলাশয় রক্ষায় কঠোর ব্যবস্থা দরকার। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পুকুর ও খাল ভরাট করে গড়ে তোলা হচ্ছে আবাসন প্রকল্প, বাজার, এমনকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও। তরী বাংলাদেশ এর আহবায়ক মো. শামীম আহমেদ বলছেন, “পানির উৎস নষ্ট হলে শুধু জমি নয়, পুরো কৃষি ব্যবস্থাই বিপন্ন হবে। তাই প্রয়োজন ‘পুকুর-ভরাট প্রতিরোধ আইন’ আরও শক্তিশালী ও প্রয়োগযোগ্য করা।”
শেষ কথা হলো- খাদ্য নিরাপত্তা রাখতে হলে জমি বাঁচান। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে প্রতিটি একর ফসলি জমি একটি প্রাণ। জনসংখ্যা বাড়ছে, অথচ জমি কমছে-এই সমীকরণ যদি নিয়ন্ত্রণে না আনা যায়, তাহলে দরজায় কড়া নাড়ছে খাদ্য সংকট। সরকার, স্থানীয় প্রশাসন, কৃষি বিভাগ ও জনগণ-সবাইকে একযোগে এগিয়ে আসতে হবে আবাদি জমি রক্ষায়। না হলে উন্নয়নের নামে আমরা হয়তো এক ভয়াবহ বিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছি, যা শুধু কৃষি নয়, দেশের সার্বিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।

আরও খবর

news image

গাজীপুরে ১৫১ পরিবারের মাঝে ছাগল ও উপকরণ বিতরণ

news image

শতভাগ ফেল করছেন যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাদের মোটিভেট করবো-অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল

news image

সৌদি-বাংলাদেশ বিজনেস সামিট তথ্যপ্রযুক্তি-জ্বালানিসহ ৫ খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ সৌদি ব্যবসায়ীদের

news image

বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে পাংশায় গুণী শিক্ষক সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত

news image

লাকসামে জমির বৈধ মালিকদের ভোগান্তি নিরসন ও নবাব ফয়জুন্নেছা ওয়াকফ সম্পত্তি রক্ষার দাবি

news image

পূজামণ্ডপগুলোর নিরাপত্তায়ও বিজিবি কাজ করছে বলেছেন - বিজিবি মহাপরিচালক মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী 

news image

দুর্গাপূজার নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে কাজ করবে দুই মন্ত্রণালয়ের ৮০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারি --উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ

news image

লালমনিরহাটে একই উঠানে মসজিদ-মন্দির, সম্প্রীতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত

news image

ডিজিটাইজ ভূমি জরিপ ব্যবস্থাপনার নতুন দিগন্তের উন্মোচন হলো

news image

পিরোজপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান

news image

টেকনাফের বাহারছড়ায় পাচারের উদ্দেশ্যে বন্দি নারী ও শিশুসহ ৬৬ জন উদ্ধার - কোস্ট গার্ড

news image

বাংলাদেশে আবাদি জমি হুমকিতে: খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে

news image

লালমনিরহাটে সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা

news image

 জাকসুর ভিপি স্বতন্ত্রের জিতু, জিএস শিবিরের মাজহার 

news image

জয়পুরহাটে ঘুষ-তদবির ছাড়াই ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলো ১৩ জন

news image

সাংবাদিক আসাদ ইসলামের বাবা নিখোঁজের পাঁচদিন পরে মরদেহ উদ্ধার

news image

প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের তথ্য অধিকার আইন জানা গুরুত্বপূর্ণ:সিনিয়র সচিব

news image

বঙ্গোপসাগরে মৎস্য সম্পদ ও ইকোসিস্টেম জরিপ শুরু করছে নরওয়ের গবেষণা জাহাজ – মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

news image

পাসপোর্ট ও ভিসা উইংয়ের কর্মকর্তাদের সেবার মনোবৃত্তি নিয়ে কাজ করার আহ্বান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

news image

অভ্যন্তরীন থেকে আন্তর্জাতিকে রূপ পাচ্ছে  কক্সবাজার বিমানবন্দর 

news image

লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপরে----বিধ্বস্ত হয়েছে চরাঞ্চল

news image

জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে ঝড়ে গাছের ডাল ভেঙ্গে পড়ে যুবকের মৃত্যু

news image

ঢাকার উত্তরায় প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জন নিহত আহত হয়েছেন ৫০ জনের বেশি

news image

হজরত ইমাম হোসেন (রা.)এই আত্মত্যাগ জুলুম ও অবিচারের বিপরীতে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় মানবজাতিকে শক্তি ও সাহস যোগাবে-প্রধান উপদেষ্টা

news image

আর নাই সাবেক সিইসি এটিএম শামসুল হুদা  

news image

সরকারি গাছ কেটে নেয়ার অভিযোগ স্থানীয় সরকার বিভাগের কর্মকর্তা ইমরান আলী’র বিরুদ্ধে

news image

 হাজী হাবিবুল্লাহ দরবেশ স্মৃতি পাঠাগারের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ ও সচেতনমূলক র‌্যালি

news image

লাকসামে কৃষকদের মাঝে কৃষি উপকরণ বিতরণ 

news image

বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে পিরোজপুরে বিএনপি'র বৃক্ষরোপণ

news image

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তে আবারো ৭ জনকে পুশ-ইন করেছে বিএসএফ